নৌকা-ধানের শীষ-লাঙ্গল শুধু তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে, মানুষের নয় : এটিএম আজহারুল ইসলাম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেছেন,“ জামায়াতে ইসলামী একক ভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় না। আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে জনগনের সরকার কায়েম করতে চাই। আমরা নৌকা দেখেছি,ধানের শীষ দেখেছি, লাঙ্গল দেখেছি। তারা শুধু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে। এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে নাই।” রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নে নতুন টেপারহাটে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ৯০টি পরিবারের মাঝে টেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,“ আগামী নির্বাচনে জনগনের ভোট পেয়ে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে, আমরা যদি ইসলাম কায়েম করতে না পারি, জনগণের সেবা করতে না পারি, জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে না পারি, আপনার ভোট আপনার কাছেই থাকবে। পরের নির্বাচনে আপনারা আমাদের আর ভোট দিবেন না। এ জন্য আপনারা একবার আমাদের পরীক্ষা করে দেখেন। আমরা এ কাজ করতে পারি কি না।”
বাংলাদেশ গরিব দেশ নয় উল্লেখ করে নায়েবে আমীর বলেন,“বাংলাদেশে সম্পদের কোন অভাব নাই। কিন্তু সৎ নেতৃত্ব ও সৎ নেতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশে সৎ নেতৃত্ব থাকলে দেশের আজ করুণ অবস্থা হতো না। হাজার লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হতো না। গরীব দেশ থেকে এতো টাকা পাচার হওয়ার কথা নয়। তাহলে এদেশ গরীব নয়। আমাদের গরীব বানিয়ে রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,“যদি সৎ নেতৃত্ব ক্ষমতায় থাকত এবং এই টাকা যদি সৎ ভাবে দেশের কল্যাণে ব্যায় করা হতো তাহলে সিঙ্গাপুর নয় সিঙ্গাপুরের চেয়ে আরো বড় দেশ হতে পারত বাংলাদেশ। বিদেশ থেকে আমাদের দেশে চাকরি করতে আসতো মানুষ। আমাদের অন্য দেশে যেতে হতো না। আমরা আর সে দিকে ফিরে যাব না। নব্য স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকার কায়েম হউক বাংলাদেশের জনগণ এটা আর চায় না।”
যারা মন্দির-প্রতিমা ভেঙেছে তারা পালিয়েছে মন্তব্য করে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন,“ ২৪ সালের আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের সময় প্রায়ই দূর্গা পূজায় দেখা যেত মুর্তি ভাঙ্গা হচ্ছে, মন্ডপে আক্রমণ করা হচ্ছে, আগুন দেয়া হচ্ছে। আর এর দায় জামায়াত-শিবিরের উপর দেয়া হতো। কিন্তু আপনারা স্বাক্ষী ২৫ সালে যে দূর্গা পূজা হয়েছে, কোন মিডিয়া বলতে পারেনি যে একটি পূজা মন্ডপে আক্রমণ হয়েছে। তাহলে আগে ভাঙ্গল কারা। যারা আগে ভেঙ্গেছে তারা দেশ থেকে পালিয়েছে। তারা এখন এদেশে নাই। আর জামায়াতে ইসলামী এদেশে আছে। এখন সবচেয়ে বেশি হিন্দু ভাইয়েরা আরামদায়ক অবস্থায় আছেন।”
নায়েবে আমির বলেন,“গত ৫৪ বছরে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। জামায়াতে ইসলামী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চায়। আমরা ইসলামী শাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশে কায়েম করতে চাই। শুধু আন্দোলন ও সংগ্রাম করে ইসলাম কায়েম হয় না। আমরা যদি জনগণের সমর্থন পেয়ে সরকার গঠন করতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ কোরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবো। এদেশের মানুষকে সুখ ও শান্তি দেয়ার চেষ্টা করব। এতে শুধু মুসলিম ভাইয়েরা উপকৃত হবে না। অমুসলিম ভাইয়েরাও উপকৃত হবে।”
বাংলাদেশে একই দিনে দুটি ভোট হলে ভুল হতে পারে ও বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। তাই জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে গণভোট দেয়ার জোর দাবী জানান নায়েবে আমীর এ টি এম আজহারুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রশিদ শাহ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, জেলা জামায়াতের আমির ও নীলফামারী-০১ আসনের সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার ও জেলা নায়েবে আমির ড. খায়রুল আনাম, সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর ও নীলফামারী-৪ আসনের সদস্য প্রার্থী হাফেজ আব্দুল মুনতাকিম প্রমূখ।
সাম্প্রতিক মন্তব্য
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য লিখুন