জাতিসংঘে গাজার ক্ষুধার্ত মানুষের ছবি দেখালেন এরদোয়ান
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে বক্তব্য দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বললেও সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধকে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া এ অধিবেশনে তিনি গাজার ক্ষুধার্ত মানুষের ছবি প্রদর্শন করেছেন। গাজার মানুষকে অভুক্ত রাখা দখলদার ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, “আপনার বিবেককে উপলব্ধি করুন আর এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন। ২০২৫ সালের এমন বর্বরতার জন্য জন্য আমাদের কি যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ আছে? এই লজ্জাজনক ছবি গাজায় হচ্ছে এবং গত ২৩ মাস ধরে বারবার হচ্ছে।”
গাজা যুদ্ধ মানবতার ক্ষেত্রে একটি কালো অধ্যায় উল্লেখ করে তিনি অপুষ্টিতে ভোগা আরেকটি শিশুর ছবি সবার সামনে তুলে ধরেন।
এরদোয়ান বলেন, “কোন ধরনের মানব বিবেক এটি সহ্য করতে পারে? কীভাবে একজন এ নিয়ে চুপ থাকতে পারে। এমন একটি বিশ্বে যেখানে শিশুরা না খেয়ে আর চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। আমরা কি শান্তি পেতে পারি?।”
ইসরায়েলের নিরাপত্তাও দেখতে হবে, বললেন বৃহৎ মুসলিম দেশের প্রেসিডেন্ট
গাজা যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছেন বিশ্বের বৃহৎ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্তোও। তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হতে হবে। তবে আমাদের ইসরায়েলের নিরাপত্তাকেও দেখতে হবে। তখনই আমরা সত্যিকারের শান্তি পাব।”
তিনি আরও বলেন, “(শান্তির) একমাত্র সমাধান হলো— ইব্রাহিমের বংশধর—আরব এবং ইহুদিদের মধ্যে পুনর্মিলন। সব ধর্মাবলম্বী যেমন মুসলিম, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ—আমাদের সবাইকে একটি মানব পরিবার হিসেবে একসঙ্গে থাকতে হবে।”
“ইন্দোনেশিয়া এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এটি কি শুধুই একটি স্বপ্ন? হয়তো, কিন্তু এটি এমন একটি সুন্দর স্বপ্ন, যার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”— যোগ করেন প্রাবো সুবিয়ান্তো।
গাজা যুদ্ধ আমাদের এখনই শেষ করতে হবে : ট্রাম্প
জাতিসংঘের অধিবেশন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “গাজার যুদ্ধ আমার এখনই বন্ধ করতে হবে। আমাদের এটি থামাতে হবে। আমাদের কাজটি করতে হবে। আমাদের শান্তি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। জিম্মিদের ফেরত আনতে হবে। আমরা (জীবিত) ২০ জিম্মির সবাইকে ফেরত চাই। তাদের এখনই চাই আমরা। এছাড়া ৩৮টি মরদেহও ফেরত চাই আমরা।”
তবে অন্যবারের মতো এবারও গাজা যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ার দায় হামাসের ওপর চাপিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তি প্রত্যাখ্যান করায় এখনো যুদ্ধ থামেনি।
এছাড়া পশ্চিমা দেশগুলো যে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে সেটি নিয়েও মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি দাবি করেন, ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলো হামাসকে পুরস্কার দিয়েছে।
অপরদিকে বিশ্বব্যাপী সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। এজন্য তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। জাতিসংঘের তীব্র সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেছেন, জাতিসংঘ কঠোর ভাষায় বিবৃতি দেয়। কিন্তু ওই বিবৃতি অনুযায়ী কোনো কাজ করে না।
সূত্র: আলজাজিরা
সাম্প্রতিক মন্তব্য
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


মন্তব্য লিখুন