Home কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৪, থানায় মামলা

ফুলবাড়ীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৪, থানায় মামলা

ফুলবাড়ীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৪, থানায় মামলা

অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বসতবাড়ির জমির সীমানাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের রক্তক্ষয়ী হামলায় নারীসহ চারজন মারাত্মক আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে উপজেলা সদর ইউনিয়নের থানা জুম্মাপাড়া চন্দ্রখানা গ্রামে। আহতরা হলেন আইয়ুব আলী (৭২) ও তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৩), ছেলে নুর আমিন (৩৮) ও মেয়ে এছপা খাতুন (৩৭)। আহতের মধ্যে নুর আমিন (৩৮) এর মাথায় ধাঁরালো অস্ত্রের কোপে তার অবস্থা খুবই গুরুতর। তিনি মাথার যন্ত্রণায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। আহত স্বজনদের চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকায় ঘটনার এক সপ্তাহ পর আহত আইয়ুব আলীর বড় ছেলে নুর ইসলাম বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় একটি লিখিত এজাহার (অভিযোগ) দায়ের করেছেন। ফুলবাড়ী থানার পুলিশ অভিযোগ পেয়ে গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা রেকর্ড করেছেন বলে শুক্রবার বিকালে নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম।

মামলার বাদী নুর ইসলাম জানান, আমার প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ভুটু, সাইদুল ইসলাম বাংটুর সাথে বসতবাড়ির জমির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তারা প্রায় সময় সীমানা নিয়ে অহেতুক বিবাদ সৃষ্টি করে মারপিট প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।

বাদী নুর ইসলাম আরও জানান, গত ৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আমার ছোট ভাই নুর আমিন বাড়ির ভিতর আঙ্গিনায় প্রতিবেশী সীমানা সংলগ্ন স্থানে পানি নিষ্কাশনের জন্য হাফ ইঞ্চি পাইপ মাটিতে বসানোর কাজ শুরু করলে আমার প্রতিবেশী ও মামলার বিবাদী সাইফুল ইসলাম ভুটু ছোট ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমার ভাই প্রতিবাদ করলে সকল মামলার বিবাদী পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক লোহার পাইপ, লোহার রড, ধারালো ছোড়া, ধারালো বটি ও রাম দা নিয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে ছোট ভাইয়ের মাথায় সজোরে আঘাত করে রক্তাক্ত কাটা জখম করে। এসময় আবারও ধারালো রামদা দিয়ে ছোট ভাইয়ের মুখসহ থুঁতনিতে সজোরে আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় পাকা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যায়। পরে আমার বাবা -মা ও ছোট বোন ভাইকে রক্ষা করতে গেলে তাদের উপরও সজোরে আঘাত করে। সে সময় ১/২/৩ নং আসামি আমার নুরজাহান বেগমের শ্লীলতাহানি উদ্দেশ্যে পড়নের শাড়ি, ওড়না টানা হেজড়া করে ছিড়িয়ে ফেলে এবং প্রায় বিবস্ত্র করে। আমার ছোট বোন এছফা মাকে রক্ষা করতে গেলেও তাকেও চর থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারে। সে সময় আমার মা -বোনের আত্মচিৎকারে স্থানীয় রাসেল মিয়া, আজিজুল রহমান দুলাল ও আকাশ মিয়া এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষ বিবাদীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে তাদের সহায়তায় আমার বাবা ও ছোট ভাইকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে প্রচণ্ড রক্ত খরচের কারণে ফুলবাড়ী হাসপাতাল থেকে ঐদিন সন্ধ্যায় গুরুতর অবস্থায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আমার বাবা, মা,বোন একটু সুস্থ হলেও আমার ছোট ভাই এখনো গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। তাদের আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।

প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল মিয়া, আজিজুল রহমান দুলাল ও আকাশ মিয়া জানান, সীমানা সংলগ্ন স্থানে নিষ্কাশনের জন্য পাইপ দিচ্ছিল। এ সময় এক পক্ষ এসে বাঁধা দেন এবং এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটে। আমরা সে সময় আহতদের ফুলবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে।

প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ গুরুত্বসহকারে তদন্ত শেষ করে বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল রাতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এই মামলার আসামীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Facebook Comments Box

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here