রাশেদ নিজাম শাহ কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ আগাম আলুর সুতিকাগার হিসাবে খ্যাত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে প্রতিবারের মত এবারও অধিক লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গত দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে আগাম জাতের হাইব্রিড চায়না ধান বিক্রির পর ওই জমিতেই আগাম আলুর বীজ বোপন করছেন তারা। কৃষকরা বলছেন এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আগাম আমন ধান চাষ করে ভাল ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকদেন মন চাঙ্গা রয়েছে। বর্তমানে ওই চায়না (আমন) ধান বিক্রির টাকায় জমিতে আলু লাগাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, গতবার এ উপজেলায় ৬ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর। যা গতবারের তুলনায় আরো ১৮০ হেক্টর বেশি। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা বেশি হওয়ার কারন গত বছর আগাম আলু চাষ করে কৃষক দুইগুন থেকে তিনগুন পর্যন্ত লাভ করেছে। কৃষি অফিস আরো জানায় মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা বেশি থাকে বাজার মূল্য থাকে চড়া তাই কৃষকের লাভ হয় বেশি। তাছাড়া কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কৃষকরা যে আলু চাষ করে থাকেন তা রোপন থেকে শুরু করে উত্তালন করা পর্যন্ত ৫৫ থেকে ৬০ দিন সময় লাগে।
সরেজমিনে দেখা যায়,উৎসবমুখোর পরিবেশে ভাগ্য পরিবর্তনের আর্শিবাদপুষ্ট আগাম আলু বুনন ও প্রস্ততে মাঠের পর মাঠগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে।বিশেষ করে সময়ের আগে এঅঞ্চলে আগাম আলু রোপণকে ঘিরে যেন প্রানচাঞ্চল্য ফিরেছে মাঠজুরে।এতে নজর কাড়ছে সবার।,রণচন্ডি ইউপির কুটিপাড়া গ্রামের আলুচাষি,আব্দুল হাই জানান,আগাম ধান কেটে আগাম আলু বুনছি।যার আলু যত আগে উঠবে সে কৃষক তত বেশি লাভবান হবেন। আগেভাগে আলু উত্তোলন করতে পারলে ৭০থেকে৮০টাকা কেজি বাজার ধরতে পারব।স্বল্প সময়ে আলু ছাড়া অন্যকোন ফসলে এত লাভবানও হওয়া যায়না। গত বছর ধান কাটার পর সেই জমির চাষাবাদকৃত আলু ক্ষেতে ৭৮টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বিঘায় লাভ করেছি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাই এবার ৬ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করছি।
কৃষক মোফাজ্জল মিয়া জানান,এ অঞ্চলের জমিগুলোএকদম উচু এবং বালু মিশ্রিত।ভারি বৃষ্টিপাত হলেও তেমন কোন ভয় থাকেনা।আর পাশেই বিশাল বাফলার বিল থাকায় সব জমির পানি অনায়াসে সেখানে নেমে যায়।তাই আগেভাগে দিগুন লাভের আশায় আগাম আলু বুনছি।
বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামে আলুচাষি মোঃ শামীম হোসেন বলেন ,গত বছর ২২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে উৎপাদন ব্যায় বাদ দিয়ে ৬ লাখ টাকা লাভ করেছিলাম। তাই এবারো দ্বিগুন লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করছি।
।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন,চলতি বছর ৬হাজার ৭৮০শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।এবছর আগাম আমন ধানে ভাল ফলন পেয়ে কৃষক আগাম আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।বর্তমানে আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় উঁচুজমিতে আলুচাষে কৃষককে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে লাগানোর কথা বলা হচ্ছে।এ ব্যাপারে মাঠপয়ার্য়ে কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে ১ লাখ ৬০হাজার মেট্রিকটন আলু উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।গড় বাজার ২৫টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে ৪শ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে।এ বছরো ভাল মুল্য পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।