ফয়সাল হক চিলমারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ৬ মাস ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জেল হাজতে আটকা রয়েছেন কুড়িগ্রামের ৭ জেলে। ভারতের সীমান্তবর্তী জিঞ্জিরাম নদী হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে মাছ ধরতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় হাজতে আটক রয়েছেন তারা।
আটক কৃতদের ৭ জন জেলের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায়। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে হাজতে আটক থাকলেও কীভাবে তাদের ফেরানো যায়, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছেন সেই পরিবারের সদস্যদের। যতই দিন যাচ্ছে চিন্তার ভার বেড়েই চলছে। তবে কোন সমাধানের পথ না পাওয়ায় চিন্তার বোঝা মাথায় নিয়ে তিন কাটছে। পরিবারের ইনকামের মানুষটি না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসার উপক্রম সেসব পরিবারের সদস্যদের।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর তাদের আটক করে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী বিএসএফ। এরপর থেকে তাদের কোন খোঁজ পাচ্ছিল না জেলে পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি ভারতের আমপাতি জেলার মাহিন্দগঞ্জ থানার তুরা মেঘালয় থানা এলাকার এক বাসিন্দার মাধ্যমে গোপনে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে তাদের সন্ধান মেলে।
আটক জেলেরা হলেন, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের হরিণের বন্দ এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), রমনা ব্যাপারী পাড়া এলাকার বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), শামছুল হকের ছেলে মীর জাহান আলী (৪৫), মৃত এছাহক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), পকের আলীর ছেলে আমির আলী (৩৫) এছাড়াও রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী ব্যাপারী পাড়ার জরিপ উদ্দিনের ছেলে আঙ্গুর হোসেন (২০), রৌমারী উপজেলার যাদুর চর বকবান্ধা এলাকার ছলিম উদ্দিনের ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।
আটককৃত ব্যক্তি বকুলের স্ত্রী আজেদা বেগম জানান, আমার স্বামী ৬ মাস ধরে ভারতের জেলে আটকা পরে আছে। কিছু দিন আগে একটা চিঠি পাঠায়। পরে আমরা এক উকিলের সাথে যোগাযোগ করি তিনি দুই লক্ষ টাকার কথা বলে। স্বামী নাই এমনিতে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে আছি। কোন রকমে বাচ্চাদের মুখে দু-মুঠো ভাত তুলে দিতেছি। আমার স্বামীকে ফেরাতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা বলেন, এই ঘটনা এর আগেও ঘটেছিল। ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ
কারণেই তারা আটক হন। ভারতীয় হাজতে আটকরা রাজীবপুরের জিঞ্জিরাম নদীর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক হন। আমরা ভুক্তভোগী পরিবারের যাবতীয় সহযোগিতা চেষ্টা করছি।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, ‘বিষয়টি আসলে আমাদের হাতে নেই। তবে ভারতে আটকা পড়া জেলেদের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।