অনিল চন্দ্র রায় কুড়িগ্রাম থেকেঃ
চরের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে এবং তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ নিশ্চিত করতে সর্বোপরি দারিদ্র্য বিমোচনে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মত চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি করে আসছে চর বিষয়ক কমিটি কুড়িগ্রাম জেলা।
চর উন্নয়ন কমিটি কুড়িগ্রাম জেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, জেলায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমার,ধরলা সহ ১৬ টি নদ নদী রয়েছে। জেলায় সাড়ে ৮শ বর্গকিলোমিটার চরে বাস করে সাড়ে ৫লক্ষ মানুষ। চরের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন না হওয়ায় কুড়িগ্রামে দারিদ্র্যের কাতারে শামিল হচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ। জেলার প্রায় ২৩শ বর্গকিলোমিটার আয়তনে লোক সংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৭লাখ(৭০.৮%), হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ১২লাখ ৭৬ (৫৩.২%), বিভিন্ন রোগ নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন ১৩ লাখ ৬৮হাজার (৫৭%)। এছাড়াও ইউনিসেফের তথ্য মতে কুড়িগ্রামে বাল্য বিবাহের হার ৭৮%। জেলায় ১ হাজার ,২৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে চরে ১৬৯ স্কুল রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণি পাশের পর চরে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে মেয়েদেরকে বিয়ের পীড়িতে বসতে হয়। বাল্য বিবাহের কারণে জন্মগ্রহণ করা শিশুগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই প্রতিবন্ধী হয়। কুড়িগ্রাম জেলায় প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৯১ হাজার ৬৭২ জন।
চর উন্নয়ন কমিটি কুড়িগ্রাম জেলার সদস্য সচিব আশরাফুল হক রুবেল জানান, কুড়িগ্রাম ১৮৭৫ সালে মহকুমা এবং ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়েছে। এই দেড়’শ বছরে কুড়িগ্রামের অনেক নেতা নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু সংসদে এই চরের মানুষকে নিয়ে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে কোন নেতা সংসদে কথা বলেননি। ফলে কুড়িগ্রাম জেলা বাংলাদেশের মধ্যে দারিদ্র্যের দিক থেকে সবচেয়ে দরিদ্র জেলা হিসেবে পরিচিত। আমাদের সংগঠন দারিদ্র বিমোচনে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি করে আসছে।এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, চরের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা স্বাস্থ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।