মোঃ মাহফুজুর রহমান সরকার, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একজন কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর তৌহিদী জনতা নাম দিয়ে একদল ব্যক্তি থানার সামনে অবস্থান নিয়ে হট্টগোল করে। পরে বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তি আদালতে জামিন পান।
এর মধ্যেই মাগুরায় একটি শিশু নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। ওই শিশুর অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীসহ সারাদেশে কয়েকটি ধর্ষণের খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নারী, শিশু ও তাদের অভিভাবকরা। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে রবিবার (৯ মার্চ) বিকেল ৪ টায় শিক্ষার্থীরা দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে।
শিক্ষার্থীরা, ‘বোন তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘মা তোমার ভয় নাই, তোমার ছেলে মরে নাই’, ‘উকিল তুমি বলো কার, ধর্ষক না ধর্ষিতার’,’ ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’,’তুমি কে আমি কে,আছিয়া,আছিয়া’, ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড,ফেস্টুন হাতে স্লোগান নিয়ে পৌরশহরের বাসস্ট্যান্ডে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি পৌর শহরের প্রধান প্রধান প্রদক্ষিণ শেষে আজাদমোড় কমলেশ চন্দ্র কুন্ডু মার্কেটের সামনে শেষ হয়।মিছিল শেষে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের ব্যানারে মানব বন্ধন ও সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা শুনছি। সেই বন্দোবস্তে নারীরা কোথায়, নারীর নিরাপত্তা কোথায়? একের পর এক এই ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। গত ১৫ বছর বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা দেখেছি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পরও এই ঘটনাগুলো বারবার ঘটছে। জুলাইয়ে নারীরা এসবের জন্য কি সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করেছিলেন?’ যে নারীরা অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থেকে ভূমিকা রেখেছেন, অভ্যুত্থানের পর দেখা যাচ্ছে, তাঁরা ঘরে ও রাস্তায় নিরাপদ বোধ করছেন না। রাষ্ট্র তার নিরাপত্তা দিতে পারছে না। শহীদ মিনারে ফুল কুড়াতে গিয়ে একজন শিশুকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। নারী তাঁর প্রতিবেশীর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন। বাসে ধর্ষিত হন। কোথাও নারীরা নিরাপদ নন।
নতুন বাংলাদেশে কেউ যেন আর ধর্ষণের শিকার না হন এবং ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।