রংপুর প্রতিনিধি:
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সবার পরিবারের কাছে যেতে চাই আমরা। শহীদ ও আহতদের পরিবারগুলো কর্মহীন হয়ে আছে। বক্তৃতা দিয়ে সান্ত্বনা দিলে লাভ হবে না। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে আমাদের।’
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রংপুরে শহীদ ও আহত ৪৪ পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক শহীদ ও আহতের পরিবার চিহ্নিত করবো। এখানে কোনও ভুল হবে না। কারণ আমাদের এক লাখ মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছে তিন লাখ, তা গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতের ক্ষেত্রে হবে না। ২০২৪ সালে তরুণ সমাজ যেভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলো, যে ভাষায় তারা কথা বললো, তাদের যে সাহস সারা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। এটি নিয়ে যুগে যুগে গবেষণা হবে। তাই লিপিবদ্ধ রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের এত বছরেও আমরা গণতন্ত্র পাইনি। সাম্য ও ন্যায্যের জায়গায় দাঁড়াতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন হয়নি। সেদিন আমরা দেশ গঠনের কাজে মুক্তিযোদ্ধাদে লাগাতে পারিনি। এটি ছিল অন্যায়। ২০২৪ সালের যোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারক-বাহক। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিজয় এনেছে। এবার তাদের দেশ গঠনের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে ভুল হবে না।’
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘একাত্তর সালে অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি আমরা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ২০২৪ সালে এসে আমাদের বলতে হচ্ছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। অর্থাৎ আরেকবার স্বাধীন। এই স্বাধীনতাকে কোনোভাবেই বিফলে যেতে দেওয়া যাবে না। টিকিয়ে রাখতে হবে। শহীদ পরিবারের কষ্ট আমরা কাউকে বলে বোঝাতে পারবো না। বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ, ভাইয়ের কাঁধে ভাইয়ের লাশ। সন্তানের জন্য মায়ের কান্না, এগুলো কোনোভাবেই ভোলা যাবে না। আজ আমরা কথা দিচ্ছি, প্রত্যেক শহীদ ও আহত পরিবারের পাশে থাকবো। আমরা কোনোভাবেই চাই না শহীদ ও আহতদের প্রতি গাফিলতি হোক। গাফিলতি হলে প্রশ্ন তুলবেন, এটি আপনাদের অধিকার।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন প্রমুখ।