রাশেদ নিজাম শাহ, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ গত বছর আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ পেয়েছে কৃষক। সে অনুযায়ী প্রতিবারের ন্যায় এবার আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বীজের চাহিদাও বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে বীজ আলুর দাম। বর্তমানে প্রতিকেজি বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। যা গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি। ফলে বীজের দাম বেশি হওয়ার কারণে একদিকে যেমন বাড়বে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় অপরদিকে আলু বীজের দাম বেশি হওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার আলু চাষি কৃষকদের। কৃষকরা বলছেন বর্তমান বাজারমূল্যে আলু চাষ করে প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদন ব্যয় দাঁড়াবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, গত বছর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর । যা গতবারের চেয়ে ১৮০ হেক্টর বেশি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা আলু চাষে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। কিন্তু অনেক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক আলু রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করলেও বীজের দাম বেশি হওয়ার কারণে এখন জমিতে আলু রোপণ করতে পারেনি। যে সমস্ত কৃষক আগে আলুর বীজ কিনেছিল তারা ইতিমধ্যে আলু বীজ রোপণ করে ফেলেছেন। এর কারণ হিসাবে কৃষকরা জানান, হিন্দু ধমার্লম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে অনেক কৃষক জমি প্রস্তুত করে রাখলেও জমিতে আলুর বীজ রোপণ করেনি। তাঁদের ধারণা পুঁজোয় বড় ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। তাই তারা বীজ কিনেনি। কিন্তু গত সপ্তাহে যেখানে আলুর বীজের দাম ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা সেখানে পুজোর পরে আবহাওয়া ঠিক থাকায় হঠাৎ করে আলুর বীজ প্রতিকেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কারণ হিসেবে তারা জানান, পুজোর পরে কৃষকের আলু বীজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে বীজের দাম বেশি হয়েছে।
পুটিমারী ইউনিয়নের কেশবা গ্রামের কৃষক জামিয়ার রহমান বলেন, বাজারে খাওয়ার আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে আবার বীজ আলু ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি এ কারণ বৃজতে পারছি না।
আলু ব্যবসায়ী জিল্লুর মিয়া জানান, গত সপ্তাহে আলু বিক্রি করেছি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। কিন্তু হঠাৎ করে গতকাল থেকে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা । হঠাৎ কেজিতে ২০ টাকা দাম বাড়ল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন ভাই আমি কীভাবে বলব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকতার্ লোকমান আলম জানান, কিশোরগঞ্জ উপজেলার মুক্তা হিমাগারেই কৃষক আলু মজুদ রেখেছিল ৭ হাজার ৬২ টন। প্রতি হেক্টর জমিতে দুই টন বীজ আলুর দরকার। সে অনুযায়ী ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে নয় হাজার টন বীজ আলু দরকার। তাহলে কি দুই হাজার টন বীজ আলু সংকট রয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের কৃষকরা মুক্তা হিমাগার বাদে রংপুরের সিনহা, এনএন,চৌধুরি,মুক্তা টুসহ বিভিন্ন হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করে থাকে এখানে কোন সংকট নেই। এটা সিন্ডিকেট করে করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কৃষি কর্মকতার্র সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।