Saturday, March 15, 2025
Homeরংপুরআড়াই লাখ টাকা বাকি খেয়ে উধাও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও শিক্ষক

আড়াই লাখ টাকা বাকি খেয়ে উধাও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও শিক্ষক

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

আড়াই লাখ টাকা বাকি খেয়ে আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত বেরোবির ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এবং এক আওয়ামী লীগ পন্থী শিক্ষক উধাও। দোকানদাররা পাওনা টাকা ফেরত পেতে খুঁজছেন তাদের।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের দেখতে না পাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসসংলগ্ন আবু সাঈদ চত্বরের (পার্কের মোড়)দোকানিদের। নেতারা ক্যাম্পাস ছাড়া হওয়ায় বাকি টাকা আদায় করা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। এই তালিকায় রয়েছে অনেক সাবেক নেতাকর্মীদের নামও।

দোকানিরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতারা এবং আওয়ামী লীগের এক শিক্ষক বিভিন্ন খাবার দোকান, ভাতের হোটেল, ডেকোরেশন ও চায়ের দোকানে বাকি রেখে যাচ্ছিলেন। অনেক সময় আগের বাকি টাকা চাইলে নেতাকর্মীরা জোর করেও খেয়ে যেতেন। আবার এমনও হয়েছে যে কর্মীরা খেয়ে নেতার নাম করে চলে গেছেন। পরে টাকা চেয়ে পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সাঈদ হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পলাতক শিক্ষক মশিয়ার রহমান (মশিউর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক সংলগ্ন পার্কের মোড়ের (বর্তমান আবু সাঈদ চত্বর) দোকানগুলোতে ৭৬ হাজার ৮৭৭ টাকা বাকি খেয়েছেন। এর মধ্যে মারিয়াম প্লাজার এক দোকানে ৪০ হাজার ৪৫০, লিফা স্টোরে ৪ হাজার ৬৩০, শাহ আলম টি অ্যান্ড কফি হাউসে ৫ হাজার ৩৭৭, মাহবুব মাল্টিমিডিয়ায় ১ হাজার ৪২০ এবং চকবাজারের রুম্মান জেনারেল স্টোরে প্রায় ২৫ হাজার টাকা বাকি খেয়েছেন।

ভাই বোন টি স্টোরে পোমেল বড়ুয়া ৯ হাজার ৮৩৫ এবং মাহফুজুর রহমান শামীম ৮ হাজার ১৯৫ টাকাসহ মোট ১৮ হাজার ৩০ টাকা বাকি খেয়েছেন।

সিনহা হোটেলে ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ৬৫০ টাকা, সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান শামীম ৫৫০ টাকা, মামুন সবুজ ১ হাজার ৩০০ টাকা, বাঁধন ৫৫০ টাকা, আক্তার ১ হাজার ২৯৫ টাকা, আরিফ ২ হাজার টাকা, আল আমিন ৪ হাজার ৬৮৩ টাকা এবং শুভ ১ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ১২ হাজার ৫২৮ টাকা। আনোয়ার হোসেন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট থেকে কনক ২ হাজার ৬৫৫ টাকা এবং পলক চাকমা ৭৭৫ টাকাসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা মিলে সর্বমোট ১১ হাজার ৯০৫ টাকা বাকি খেয়েছেন। শাহ আলম টি অ্যান্ড কফি হাউসে তুষার কিবরিয়া ৫ হাজার ৩১১৯ এবং পোমেল বড়ুয়া ৬ হাজার ৭৩৮ টাকাসহ মোট ৫৯ হাজার ৮৫৭ টাকার বাকি খেয়েছেন। ঢাকা তেহরী হাউসে সিটন ১ হাজার ৪৮০ টাকার বাকি খায়। জয়া ডেকোরেশনের দোকান থেকে সাবেক নেতা মাহমুদ ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং সাইফুল ২ হাজার ২০০ টাকাসহ মোট ৬ হাজার ৭০০ টাকা বাকি রেখেছেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ছোট ছোট চা স্টলগুলো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছে সব মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকার মতো বকেয়া পাবেন বলে জানান।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখতার ইলাহী হলের ডাইনিং ম্যানেজার জুয়েলয়ের কাছে কত টাকা পায় তা বলতে না পারলেও বঙ্গবন্ধু হলের ডাইনিং ম্যানেজার দৌলত সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে ৫২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে বলে জানান।

দোকানদাররা জানান, আমরা বারবার কল দিতেছি টাকার জন্য কিন্তু টাকা দেব দেব বলে কিন্তু তার পরও দেয় না। অনেকেই কল ধরছে না আবার মোবাইল বন্ধ। আমরা চাই, আমাদের টাকা যাতে ফেরত দিয়ে যায়। জয়া ডেকোরেশনের মালিক বলেন, অনেক সময় আমাদের ডেকোরেশন ভাড়া নিয়ে ভাড়া কম দিত বাবুল মিয়া। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বাকির টাকার জন্য বেরোবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের খুঁজছেন দোকানিরা। অনুষ্ঠান হলে চাঁদা দিতে হতো। আমার বকেয়া টাকা এখনও পাইনি।

স্থানীয় দোকানিদের এই অবস্থার কারণে ব্যবসার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে এবং তারা তাদের পাওনা টাকা ফেরত পেতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে একমাত্র দায়িত্বে বহাল থাকা ব্যক্তি রেজিস্টার আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো দোকানির অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে বিষয়টি দেখা হবে। তবে এটা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় ভেতরের হলে ভালো হতো।

-এম কে পুলক আহমেদ, বেরোবি

 

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর