Saturday, March 15, 2025
Homeরংপুর২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চার নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতালে বিক্ষোভ

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চার নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতালে বিক্ষোভ

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

রংপুর নগরীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চার নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া নবজাতকদের বয়স ৪ থেকে ১২ দিন। অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসকের অবহেলার কারণে শিশু মৃত্যুর এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ করে সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেছেন। নবজাতক শিশুর মৃত্যুর মর্মান্তিক এ ঘটনাটি রংপুর নবজাতক শিশু ও প্রসূতি সেবা হাসপাতালে ঘটেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, নবজাতক শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখতে আসেননি। প্রয়োজন মাফিক কোনো চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বরং শিশু মারা যাওয়ার পরেও টাকার লোভে এনআইসিইউতে রেখে বিল বাড়ানো হয়েছে। পরে অভিভাবকদের চাপাচাপির কারণে মারা যাওয়ার বিষয়টি শিকার করে।

অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসাজনিত অবহেলার কারণে দুইদিনে চার নবজাতকের মৃত্যু হলেও এর দায় এড়িয়ে উল্টো ব্যবসায়িক মনোভাব দেখায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অসহায় পরিবারগুলোকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাজার হাজার টাকার রশিদ হাতে দিয়ে বিল পরিশোধের চাপ দিতে থাকেন তারা। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা বাঁধে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা সেখানে যান।

মারা যাওয়া এক নবজাতকের অভিভাবক আশিকুর রহমান আশিক জানান, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তার স্ত্রী। পরে মেডিকেলে সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। সন্তান জন্ম নেওয়ার পরপরই চিকিৎসকরা এনআইসিইউতে নিতে বলে। কিন্তু মেডিকেলের এনআইসিইউতে সিট না থাকায় এক দালাল তার সন্তানকে নবজাতক শিশু ও প্রসূতি সেবা হাসপাতালে ভর্তি করাতে প্রলুব্ধ করেন। পরে সন্তানকে সুস্থ করতে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির চারদিন হলেও কোনো রকম বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মেলেনি। ভালো নার্সও পাওয়া যায়নি এখানে। আয়ারাই নার্সের কাজ করেন। চিকিৎসকের কথা বললে এই আসছে, কিছুক্ষণ পর আসবে, আজকে আসবে না, কালকে আসবে। এভাবে চারদিন অতিবাহিত হলেও চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায়নি। শেষমেষ আমার সন্তানকে তারা মেরেই ফেললো। আমি এই হাসপাতালের সাথে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একই অভিযোগ অন্য অভিভাবকদেরও।

এদিকে অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করলে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন ব্যবস্থাপকসহ নার্সরা। অনেক নবজাতকের অভিভাবক তাদের শিশুদের ভর্তি বাতিল করে বের হয়ে যান। এ সময় কোনো চিকিৎসক এবং পরিচালক কাউকে হাসপাতাল পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও তিন নবজাতক শিশু মারা যায়। যাদের তত্ত্বাবধায়নে এসব নবজাতকের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা ছিল, তাদের কেউ হাসপাতালে ছিল না বলে অভিভাবকরা দাবি করছেন। কিন্তু আমার জানা মতে চিকিৎসার কোনো কমতি হয়নি।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর