ইকবাল বাহার, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
আইনজীবী ও চিকিৎসকদের সমন্বয়ে জেলা ভিত্তিক আইনি ও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেল গঠন করেছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় পঞ্চগড় জেলার স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেলে দুইজন চিকিৎসককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে এক আওয়ামীপন্থি চিকিৎসককেও জায়গা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই চিকিৎসকের নাম ডা. আফরোজা বেগম রীনা। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) পঞ্চগড় জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি এক প্রেস ব্রিফিং-এ এই সেল গঠনের বিষয়টি প্রকাশ করেন।
প্রেস ব্রিফিং-এ উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সময়ে নির্যাতিত আছিয়াকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর বিষয়টি কোনোমতেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছেনা। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে অতিদ্রুত আইনের শাসন বলবৎ, কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতিকারীরা নানাভাবেই আশকারা পাচ্ছে। মানুষের সমবেত ধ্বনি ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা, কিন্তু সেটি যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেতে থাকবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি দেশব্যাপী নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহে ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি এবং স্বাস্থ্য সহায়তা সেল’ গঠন করেছে।
এদিকে, আওয়ামীপন্থি চিকিৎসক বিএনপির এমন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে জায়গা পাওয়ায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই ফেসবুক পোস্টে নেতিবাচক মন্তব্যও করছেন।
মাসুদ মল্লিক নামে একজন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আওয়ামীলীগের লোক কিভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় সেলে আসে। বিএনপি কি এতটাই দেওলিয়া হয়েছে। এগুলোর দেখার কেউ নেই। এভাবেই প্রত্যেকটা জায়গায় যদি আওয়ামী লীগের দোসর/দালাল গুলো ঢুকে যায় তাহলে একটা সময় বিএনপি দলের সমস্যা হতে পারে।
ডা. আফরোজা বেগম রীনা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কমিটিতে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন স্বাচিপের পঞ্চগড় জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. মনসুর আলম। তিনি বলেন, সেসময় উনাকে (ডা. আফরোজা বেগম রীনা) রাখা হয়েছিল।
তবে কোন পক্ষের সঙ্গেই জড়িত নন এবং বিএনপির স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেলের সদস্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও কোনো চিঠি পাননি দাবি করেন ডা. আফরোজা বেগম রীনা। তিনি বলেন, আমি কোন কিছুর সাথেই সম্পৃক্ত না। আমরা চাকরি করছি ডাক্তার হিসেবে সবখানে নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা কি একটিভলি কোন কাজ করছি? কোন মিছিল-মিটিং করছি? আমরা চাকরি করি যখন যে আসে, আমাদের নাম ঢুকায় দেয়। এখানে আমাদের করার কিছু থাকেনা। কোথাও সিগন্যাচারও করিনি, ফরমও পূরণ করিনি। নাম দিয়ে দিলেতো কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু বলেন, ডা. আফরোজা বেগম রীনাকে স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেলের সদস্য করার বিষয়ে আমি অবগত নই। ইতোমধ্যে জেনেছি তিনি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।