Tuesday, April 1, 2025
Homeগাইবান্ধাসুন্দরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

সুন্দরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

মোঃ নুরুন্নবী মিয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) গাইবান্ধা:

গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার মিলির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এক সাংবাদিককে স্যান্ডেল খুলে মারার হুমকি দেন।

বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে বিদ্যালয়ের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকা এই প্রধান শিক্ষক। এসময় দেশ রূপান্তর পত্রিকার সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি শেখ মামুন উর রশিদ তার কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “তুই সাংবাদিক তো কি হইছিস? তোকে স্যান্ডেল খুলে পিটাবো!” এরপর তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে আরও অশোভন আচরণ করেন এবং কোনো মন্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

দুর্নীতির অভিযোগ ও ক্ষমতার অপব্যবহার ফাতেমা আক্তার মিলি গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের প্রয়াত এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের শ্যালিকা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতির বোন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করেছেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিনি বিদ্যালয়ে একক আধিপত্য কায়েম করেছেন এবং তার স্বামীর বড় ভাইকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বানিয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগের নামে কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। এসব বিষয়ে একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার মেলেনি।

আওয়ামী লীগের পতনের পর ছিলেন লাপাত্তা ,গত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মিলি অনেকদিন ধরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যখন তাকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে, তখন তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে হঠাৎ এসে তিনি নিজের স্বভাবসুলভ আচরণ বজায় রাখেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সাংবাদিকরা যখন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চান, তখন তিনি রীতিমতো রেগে গিয়ে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন এবং সাংবাদিককে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার হুমকি দেন।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জের সাংবাদিক মহল ও সচেতন মহল তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। স্থানীয়রা মিলির অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিক শেখ মামুন উর রশিদ বলেন, “একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। তিনি ক্ষমতার দাপটে যা খুশি তাই করছেন। আমরা চাই, তার দুর্নীতির তদন্ত হোক এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

অপরদিকে, বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে অনিয়ম-দুর্নীতির শাসন চলছে, যা শিক্ষার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।

এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সুন্দরগঞ্জের মানুষ দ্রুত বিচার ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর