এ কে এম কায়সারুল আলমঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বিদ্যুতের অত্যাধুনিক খুঁটি নির্মাণের সিমেন্ট আনলোডকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন । বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে ।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, দোয়ানীতে সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের কাছে বিদ্যুতের অত্যাধুনিক খুঁটি নির্মাণের কাজ চলছে । সেই কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ট্রাক থেকে পণ্য খালাসের শ্রমিক সরবরাহের প্রস্তুতি নেন গড্ডিমারী ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা । এরই মধ্যে সে কাজে ভাগ বসান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব সোহেল তালুকদার, যা নিয়ে দুই পক্ষে বিরোধ সৃষ্টি হয় ।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই কাজের জন্য সিমেন্টভর্তি একটি ট্রাক এলে শ্রমিক নিয়ে তা খালাস শুরু করেন গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সম্পাদক রোকনুজ্জামান বাবুল । খবর পেয়ে সানিয়াজান ইউনিয়ন থেকে লোকজন নিয়ে এসে সেই কাজে বাধা এবং নিজের শ্রমিকদের নিয়োগ করেন সোহেল । এতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হামলা করা হলে আহত হন বাবুল ।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই ইউনিয়নের বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন । এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন ।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চারজনকে ভর্তি করা হলেও বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান ।
এ বিষয়ে আহত শ্রমিক রোকোনুজ্জমান বাবুল বলেন, আমি গাড়ি আনলোড করতে গেলে কয়েকজন যুবক সেখানে এসে বাঁধা দেয় । এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে ।
বিএনপি নেতা আ. মালেক বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে আমি সিমেন্ট এবং পাথর সরবরাহ করি।। বৃহস্পতিবার রাতে সিমেন্টের গাড়ি আনলোড করাকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সোহেল তালুকদারের নেতৃত্বে তার বাহিনী নিয়ে এসে আমার লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সোহেল তালুকদার বলেন, সেখানে আমি মীমাংসা করার চেষ্টা করি। অথচ এখন আমি ষড়যন্ত্রের শিকার । এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা উচিত ।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, গড্ডিমারীর কাজ স্থানীয় শ্রমিকেরা করবেন, এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু সোহেল তালুকদার নিজের সানিয়াজান ইউনিয়নের শ্রমিক দিয়ে কাজ করাতে এবং অন্য জিনিস নিজেই সরবরাহ করতে চান। এ জন্য ত্রাস সৃষ্টি করতে আমার ইউনিয়নের যুবদলসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের মারধর করেছেন । আমরা হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন নবী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।