অনিল চন্দ্র রায় ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
বাংলার বসন্ত মানেই পলাশ। আর পলাশ মানেই পর্ণমোচী (ফুল-ফল পাকলে ঝরে যায়) বৃক্ষের লাল আভা। সেই সাথে সবুজের ভিড়ে পলাশ ফুল দেখে মনে হতে পারে থোকা থোকা আগুনের যেন শিখা। পলাশ যেন বসন্তের ফাগুন-প্রকৃতির মন রাঙানোর দায় নিয়েছে।
ফাল্গুনের শুরু থেকেই শোভা ছড়াচ্ছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ঠাকুরপাঠ এলাকায় থাকা পলাশগাছটি। পলাশ গাছটির ডালপালা ছেঁয়ে গেছে বসন্তের আগমনী বার্তা বয়ে নিয়ে আসা রঙিন পলাশ ফুলে। প্রতিদিনেই এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন ওই এলাকার বাসিন্দাসহ দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা ।
বালারহাট-ফুলবাড়ী সড়ক (ঠাকুর পাঠ) বাজার সংলগ্ন দুটি দোকানের মাঝে পূর্বদিকে তাকাইলে চোখে পড়বে পলাশগাছটি। পলাশ গাছটি মুলত রাধাগোবিন্দ (দোল) মন্দির প্রাঙ্গণে এবং ঠাকুর পাঠ বাজারের-পূর্ব দিকে দাঁড়িয়ে আছে পলাশগাছটি।
পলাশগাছটির কাছে গিয়ে দেখা যায়, গাছের তলে যেন পলাশফুলের এক অসাধারণ বিছানা। ডালে ডালে পাখি ও মৌমাছির ওড়াউড়ির দৃশ্যটিও এক অসাধারণ। অনেকেই গাছের তলায় দাঁড়িয়ে কেউ ফুলের শোভা দেখছিলেন। অনেকেই আবার ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করে মনের আনন্দ উপভোগ করেছেন। শুধু ঠাকুরপাঠ এলাকায় নয় পলাশ ও শিমুল ফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পথে প্রান্তরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বলে দেখা গেছে।
ঠাকুর পাঠ এলাকার অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নরেশ চন্দ্র বর্মনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার বাবা এবং তার দাদা আমলের পলাশ গাছ (যজ্ঞ পলাশ)। যজ্ঞ পলাশ ফুল দিয়ে দোল /রাধাগোবিন্দ পূজা , স্বরসর্তী পূজা ও যজ্ঞসহ বিভিন্ন ধরণের পূজা অর্চনার কাজে ব্যবহার হয়। তাই বাপ-দাদারা প্রায় দেড়শত বছর আগে মন্দিরে রোপন করেছে। পলাশ গাছটির কাছে যে কেউ আসলেই অনেকের নজর চলে যায় গাছটির দিকে। সত্যিই পলাশফুলের সুভাষ ছড়াচ্ছে পুরো এলাকা জুড়ে। মেইন সড়কের পাশে পলাশ গাছটি লাল হয়ে থাকায় সবার নজর গাছটির দিকে। গাছে যতদিন লাল পলাশ ফোঁটার সৌন্দর্য থাকবে ততদিন মন্দির প্রাঙ্গণ ও ঠাকুরপাঠ বাজার জুরে মুগ্ধতা ছড়াবে না। ফলে এই সময়টা সবার ভালো লাগার একটি জায়গায় পরিনিত হয়েছে। পলাশ বসন্তের বার্তাবাহী ফুল। গাছে-গাছে পলাশ-শিমুল না ফুটলে ঋতুরাজের সৌন্দর্য ঠিক ফোটে।
ওই এলাকার মইনুল ইসলাম লেবু, সাগর মিয়া ও মাসুদ রানা বলেন, ছোট থেকেই দেখে আসছি এই ফাল্গুন মাস আসামাত্রই পলাশ গাছটির লাল পলাশ ফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যটি আমরা খুবই উপভোগ করি। মোবাইলে ছবিও তুলি ফেসবুকে পোষ্ট করি। এই ফুলের সুভাষ ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেকেই আসেন ঠাকুর পাঠ বাজারে।
ঠাকুরপাঠ বাজারের ব্যবসায়ী রতন মিয়া, মাসুদ রানা ও লিটন মিয়াসহ অনেকে জানান, এটি অনেক পুরাতন গাছ। আমরা যখন সকাল -বিকাল দোকান খুলতে আসি তখন পলাশ ফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে খুবই ভালো লাগে। এই পলাশফোটার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন অনেকেই।