Saturday, March 15, 2025
Homeপঞ্চগড়দোকানভাড়া ২২ হাজার, সরকার পায় ৮১০ টাকা

দোকানভাড়া ২২ হাজার, সরকার পায় ৮১০ টাকা

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: ১৭ বছর ধরে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকার দোকান চলছে একই ভাড়ায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় থাকা জেলা পরিষদের দোকান থেকে পরিষদ ভাড়া পাচ্ছে ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। তার বিপরীতে ইজারা নেওয়া দোকানমালিকেরা অন্য ব্যক্তিদের সাবলিজ দিয়ে ভাড়া তুলছেন সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত। বর্তমান বাজারমূল্যের তুলনায় এ ভাড়া প্রায় ২৫ গুণ কম হওয়ায় দোকানভাড়া থেকে বাস্তবসম্মত রাজস্ব আয় করতে পারছে না পঞ্চগড় জেলা পরিষদ।

জানা যায়, পঞ্চগড় জেলা পরিষদের ১২৬টি দোকান বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেওয়া আছে। কিন্তু দোকানভাড়ার হার ও জেলা পরিষদের রাজস্ব আয়ের হিসাবে অসামঞ্জস্য দেখা যাচ্ছে। ১৭ বছর আগের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী ১২৬টি দোকান থেকে মাসে আয় করেছে প্রায় ১ লাখ টাকা। প্রতিবছর ১২ লাখ টাকা আদায় করার কথা থাকলেও অধিকাংশই ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করেনি। কারও কারও বাকি ১৫৯ মাসের, তো কারও বাকি ৯৪ মাসের। আর বাস্তবে বাজারমূল্যে ভাড়া প্রতিবছর প্রায় ১ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পঞ্চগড় সদর উপজেলায় জেলা পরিষদ মার্কেটে বর্তমান দোকানভাড়া ৬ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু তার বিপরীতে একটি দোকানের ভাড়া বাবদ জেলা পরিষদকে মাসে ৩০০-৭৬৫ ও ৮১০ টাকা দেন ইজারা নেওয়া দোকানমালিকেরা। অথচ দোকানের সামনের বারান্দায় দুজন হকার বসিয়েই মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করছেন তাঁরা, যা মূল ভাড়ার চেয়ে প্রায় ১২ গুণ বেশি।

পঞ্চগড় পাবনা সুইটস মিষ্টির দোকানের মালিক আনিসুজ্জামান সবুজ বলেন, ‘আমরা একজনের কাছে থেকে এ দোকানভাড়া নিয়েছি। প্রতি মাসে ২২ হাজার টাকা ভাড়া দেই। তিনি জেলা পরিষদকে কত দেন জানি না। আমরা দোকানের সামনে আরেকজনকে ভাড়া দিয়েছি, তাঁর কাছ থেকে মাসে ৬ হাজার টাকা নিই।’

পিঠার দোকানদার আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা তো জানি না জেলা পরিষদের এ দোকানগুলোর আসল ভাড়া কত। কিন্তু আমরা প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ভাড়া দেই।’ আরেক দোকানদার কামাল বাদশা বলেন, ‘আমার দোকানে আমি ১৫ হাজার টাকা মাসে ভাড়া দেই। শুনলাম আমার দোকানের ভাড়া ৮৫৫ টাকা।’ সেলিম নামের এক দোকানদার বলেন, ‘এসব দোকান কয়েক হাতবদল হওয়ার পরই ভাড়া কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ভাড়া বাড়ানো।’

গত ৫ আগস্টের পর থেকে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট ও পরিষদের সদস্য হারেজ আলী আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখলাম অধিকাংশ দোকানের ভাড়া বাকি অনেক মাসের। তাঁদের নোটিশ দিয়ে এক মাসের মধ্যে ভাড়া পরিশোধ করে নিয়েছি। আমাদের মার্কেটে যে দোকানগুলো রয়েছে, সেখানে সরকার খুবই নামমাত্র ভাড়া পায়। সে জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনার জন্য আমরা একটা কমিটি করেছি।’

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর