Saturday, March 15, 2025
Homeরংপুরঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান, বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান, বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

মিঠাপুকুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের মিঠাপুকুরে শঠিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও সংস্কার বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক নূরানী পারভীন আনছারীর বিরুদ্ধে। রংপুরের মিঠাপুকুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। খণ্ড খ্ণ্ড ফাটল ও নড়বড়ে অবস্থাতেই চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় স্কুলে শিশুদের পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন বেশির ভাগ অভিভাবক।

এ ছাড়া শিক্ষকদের বিশ্রামাগার সংস্কার করা, ওয়াশব্লক সংস্কারের টাকা আত্মসাৎ ও ২৫০ কেজি চলতি বছরের বই বিক্রির অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

শঠিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিদ্যালয়টির ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা, ওয়াশব্লকের কাজ বাবদ আরও ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ কাজ না করেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নূরানী পারভীন আনছারী। কাজ না করেই তৈরি করা হয়েছে ভুয়া বিল ভাউচার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ক্ষুদ্র মেরামত ফান্ডের কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল ভবনের ফাটল সংস্কার ও পলেস্তরা করা। তা না করে শিক্ষক বিশ্রামাগারে টাইলস লাগানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ২ লাখ টাকার বিপরীতে প্রতিষ্ঠানে ১ লাখ টাকার কাজও হয়নি। শিক্ষক বিশ্রামাগার ভবনের পুরোটায় নিম্নমানের রং করা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে দাখিল করা বিল-ভাউচারে নানা রকম অসংগতি পাওয়া গেছে। ওয়াশব্লকের কাজের বিপরীতে ২০ হাজার টাকার বরাদ্দ থাকলেও সরেজমিনে কোনো কাজ দেখা যায়নি। ওয়াশব্লকের গেইট সংস্কার বাবদ খরচ দেখানো হলেও তা সংস্কার করানো হয়নি। ভাউচারে মোহল লাল নামে একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে দিয়ে ওয়াশব্লকের ৩৬ দিন পরিস্কারের বিল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কাউকে এমন কাজ করতে দেখেননি শিক্ষকরা।

এক শিক্ষার্থী অভিভাবক আজমল হোসেন বলেন, আমাদের সন্তানরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠ গ্রহণ করছে। তাদের মাথার উপর ছাদগুলো ফেটে চৌচির। সেগুলো সংস্কার না করে শিক্ষক বিশ্রামাগারের টাইলস লাগানো হয়েছে।

আরেক অভিভাবক বিপ্লব রহমান বলেন, ওয়াশব্লকের কোনো কাজ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিক্রি করা হয়েছে চলতি বছরের বইগুলো।

বিদ্যালয়টির দাতা সদস্য সন্তোষ কুমার রায় বলেন, প্রধান শিক্ষক শ্রেণিকক্ষ মেরামত না করে ইচ্ছেমত খরচ করেছেন। ওয়াশব্লকের টাকা আত্মসাৎ করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নূরানী পারভীন আনছারী বলেন, সংস্কারের টাকা দিয়ে শিক্ষকদের কক্ষে টাইলস ও কিছু আসবাবপত্র ক্রয় করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে কাজ না করা, ওয়াশব্লক মেরামতের টাকা আত্মসাৎ ও চলতি বছরের বই বিক্রি সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

মিঠাপুকুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, প্রধান শিক্ষক কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মল হক শাহ বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর