Home দিনাজপুর খানসামায় একই স্থানে বিএনপির দু’গ্রুপের কর্মসূচিতে উত্তেজনা

খানসামায় একই স্থানে বিএনপির দু’গ্রুপের কর্মসূচিতে উত্তেজনা

খানসামায় একই স্থানে বিএনপির দু'গ্রুপের কর্মসূচিতে উত্তেজনা

এনামুল মবিন সবুজ, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুর খানসামা উপজেলার পাকেরহাটের শাপলা চত্বরে একইস্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপ। এ কর্মসূচিকে ঘিরে বিএনপির দীর্ঘদিনের বিভক্তি প্রকাশ্যে এসেছে এবং পুরো উপজেলাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির একটি অংশ কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান মিয়ার অনুসারী। আরেকটি অংশ বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সমর্থক। পূর্বে এ গ্রুপটি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সরকারের অনুসারী ছিল। বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। গত ১৩ই মার্চ চিরিরবন্দরে কর্নেল মোস্তাফিজের অনুসারীরা বিএনপির ব্যানারে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের ঘোষণা দেয়। গত ১৪ই মার্চ উপজেলার অমরপুর ইউনিয়নের কারেঙ্গাতলী বাজারে সেই কর্মসূচি আয়োজনের সময় প্রতিপক্ষের হামলার অভিযোগ উঠে। ফলে ইফতার ও দোয়া মাহফিল স্থগিত হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ১৬ই মার্চ রবিবার খানসামা উপজেলার পাকেরহাটের শাপলা চত্বরে কর্নেল মোস্তাফিজের অনুসারীরা এক মানববন্ধনের ঘোষণা দেন। এরই জবাবে আখতারুজ্জামান মিয়ার অনুসারীরা কর্নেল মোস্তাফিজকে বিএনপিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে একই স্থানে একই সময়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উভয় গ্রুপের প্রচারণা চলতে থাকায় পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হলে প্রশাসন উভয়পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন।

খানসামা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক চৌধুরী বিএসসি জানান, বিএনপিকে বিভক্তকরণের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদেই তাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। অপরদিকে, কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী আয়োজিত ইফতার মাহফিলে হামলার প্রতিবাদেই মানববন্ধন ডাকা হয়েছে।

খানসামা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাঈদ আহমেদ সেলিম বুলবুল জানান, রমজান মাসে হঠাৎ করে জনৈক মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি উপজেলা বিএনপির কাউকে কোনোকিছু না জানিয়ে সুসংগঠিত বিএনপিকে দ্বিধাবিভক্ত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপির সদস্য না হয়েও মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নে ইফতার মাহফিল শুরু করেন। এরই প্রতিবাদে উপজেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা আসার পূর্বেই জনৈক মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে বিপক্ষের লোকজন উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ সমাবেশও করা হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সরকার ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজমূল হক জানান, বেলা ১১টার দিকে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রশাসন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে উদ্ভূত পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। দুপক্ষকেই সংঘাত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অফিস ভাংচুরের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Facebook Comments Box

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here