Saturday, March 15, 2025
Homeরংপুরকিশোরগঞ্জে আলুর দ্বিগুন ফলন ন্যায্য মূল্য ও সংরক্ষনে উদ্বিগ্ন কৃষক

কিশোরগঞ্জে আলুর দ্বিগুন ফলন ন্যায্য মূল্য ও সংরক্ষনে উদ্বিগ্ন কৃষক

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

রাশেদ নিজাম শাহ কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর দ্বিগুণ ফলন হয়েছে। তবে উৎপাদিত আলুর ন্যায্যমূল্য ও সংরক্ষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কৃষক। কৃষকরা জানিয়েছে বীজ আলু প্রতি কেজি একশ টাকা কেজি দরে কিনে জমিতে রোপণ করার কারণে আলু উৎপাদন ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর বাজার মূল্য ১৩ টাকা থেকে ১৫ টাকা চলছে। ফলে বিঘা প্রতি কৃষকের লোকসান হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এদিকে হিমাগারে বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য ভাড়া বৃদ্ধি করায় কৃষকের জন্য সেটা মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ৪ শ ৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রন করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো ৬৫ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ করা হয়। এবার আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে আলুর ফলন দ্বিগুণ হয়েছিল কিন্তু দাম না থাকার কারণে কৃষক উৎপাদন খরচ উঠাতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে কৃষকরা আলু উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোন কোন কৃষক ধার দেনা পরিশোধ করার জন্য প্রতিকেজি আলু জমিতেই ১৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ফেলছেন আবার কেউ কেউ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার জন্য আলু উত্তোলন করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

বাহাগিলি ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলু চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ১০০ টাকা কেজি দরে সেভেন জাতের ১৪ বস্তা (৭০০) কেজি আলু ৭০০০০ হাজার টাকায় কিনে ৭৫ শতক জমিতে রোপণ করেছিলাম । আলু বীজ বাদ দিয়ে শ্রমিক ,সার কীটনাশকসহ আমার উৎপাদন ব্যয় দাড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আলুর ফলন দ্বিগুণ হওয়ার পরে আমার লোকসান হবে ৮০ হাজার টাকা।

একই গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, আমি ৭ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছিলাম , প্রতিবিঘাতে আমার উৎপাদন ব্যয় ৪০ হাজার টাকা করে। সে হিসাবে আমার লোকসান হবে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকার মত।

পানিয়ালপুকুর গ্রামের আলুচাষী সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর আমি আলু চাষ করি ১৫ থেকে ২০ বিঘা জমিতে এবারও ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। এবার আলু চাষ করে আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। বর্তমানে আলুর দাম কম হওয়ার কারণে না পারছি বেচতে আবার না পারছি হিমাগারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে। তিনি বলেন, হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে গেলে ৫০ কেজির একটি বস্তার দাম ৫৫ টাকা, আলু প্রসেসিং খরচ বস্তা প্রতি ২০ টাকা, হিমাগারের ভাড়া প্রতি কেজি ৮ টাকা হিসাবে চারশ টাকা, হিমাগারে নিয়ে যাওয়ার পরিবহণ ব্যয় বস্তাপ্রতি ৪০ টাকা সব মিলে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে গেলেও প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় ব্যয় হবে ৭ থেকে ৮শ টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকতার লোকমান আলম বলেন, এবার আলুর ফলন বেশি হওয়ার কারণে আলুর দাম কমে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমান আলুর মৌসুম হওয়ার কারণে দাম কমে গেছে। তিনি কৃষকদের আলু বিক্রি না করে হিমাগারে রাখার পরামর্শ দেন। হিমাগারে আলু সংরক্ষণের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কৃষকদের কথা চিন্তা করে হিমাগার মালিকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর