বদরগঞ্জ (রংপুর):
রংপুরের বদরগঞ্জে আমন ধান সংগ্রহের সময় শেষ হতে চললেও খাদ্য বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল ক্রয় শতভাগ অর্জন হবে বলে আশা উপজেলা খাদ্য বিভাগের।
বদরগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলার খাদ্য বিভাগ আমন ৬৮৯ টন চাল ও ১ হাজার ৩০০ টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়। ৪৭ টাকা কেজি দরে চাল এবং ৩৩ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয় অভিযান শুরু হয় গত বছরের ১২ ডিসেম্বর, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গতকাল পর্যন্ত ৫১৮ টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। তবে এক ছটাক ধানও ক্রয় করা হয়নি।
জানা গেছে, সরকারের দরের চেয়ে খোলাবাজারে ধান বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে কৃষকেরা সরকারি গুদামমুখী না হয়ে খোলাবাজারে ধান বিক্রি করছেন।
গতকাল বদরগঞ্জ পৌর বাজারে ধান বিক্রি হয়েছে (২৮ কেজি) ৯৪০-৯৮০ টাকা দরে। আমরুলবাড়ির কৃষক আখেরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা খোলাবাজারে ধান বিক্রি করে সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাই। কোনো ঝুট-ঝামেলা নেই। আর সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে আগে নিবন্ধন করতে হবে, এরপর লটারিতে নাম উঠতে হবে, পরে ধান ভালো করে মিটার পাস করতে হয়। ধানে কোনো ধুলাবালু থাকা যাবে না। কৃষি কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করতে হয়। এরপর টাকার জন্য সরকারি গুদামে ধান দিয়ে গুদাম কর্মকর্তা এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদেরকে স্যার স্যার বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে যায়।’
এই কৃষক আরও বলেন, ‘নিজের ধান বিক্রি করমো, তা এত ঝামেলা টানার দরকার কী? আমাদের খোলাবাজারে ধান বিক্রি করাই ভালো।’
বদরগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এখানে ধান দিতে হলে মিটার পাস হতে হবে। সরকারের নির্ধারিত দরের চেয়ে খোলাবাজারে ধুলা-পাতানসহ ধান বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে কৃষকেরা গুদামমুখী না হয়ে খোলাবাজারে বিক্রি করছেন।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখানে চালও পাওয়া যেত না। কিন্তু ১৯ জন মিলমালিকের সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় তাঁরা লোকসান দিয়ে হলেও গুদামে চাল দিচ্ছেন। আশা করছি, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শতভাগ চাল ক্রয় করতে সক্ষম হব।’