মোঃ আসতারুল আলম, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
নতুন রাজনৈতিক দল ‘আওয়ামী লিগ’ নামে নিবন্ধন চেয়ে নির্বাচন
কমিশনে আবেদন করা হয়েছে। এর প্রতীক চাওয়া হয়েছে ‘নৌকা’
অথবা ‘ইলিশ’। গত ২৪ মার্চ দলটির নিবন্ধন চেয়ে উজ্জ্বল রায় (২৭)
নামের এক ব্যক্তির পরিচয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আবেদন করা
হয়। এরপর বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে শুরু হয় আলোচনা। তার দল গঠন
নিয়েও এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন।
দিনাজপুরে তাকে এলাকার মানুষ উজ্জল রায় নয়, চেনেন ভিভিড সাহা
নামে। আর তার বাবা-মায়ের দাবি, উজ্জল রায় একজন মানসিক রোগী। গত
সাতদিন ধরে তিনি বাড়িতে নেই। তারা জানেন না ছেলে কোথায়
আছে।
জানা যায়, ২৫ মার্চ (মঙ্গলবার) উজ্জল রায় নামে একজন ‘আওয়ামী লিগ’
নামে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়ে নির্বাচন কমিশনের
(ইসি) কাছে আবেদন করেন। যার বাড়ি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর
উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামে। তার বাবার নাম নরেশ চন্দ্র রায়, মা পারুল
রায়। তাদের বাড়ির গেটে লেখা রয়েছে সাহা পরিবার।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে তাদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় উজ্জল রায় ওরফে
ভিভিড সাহার বাবা-মায়ের সঙ্গে। তারা জানান, তাদের ছেলের মাথায়
সমস্যা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন নিউরোসার্জন ডা. রাজ কুমার রায়ের
কাছে ছেলের চিকিৎসা করেছেন। ছেলে চারবার পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি
পাস করেছেন। তিনি বর্তমানে ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস
ম্যানেজমেন্ট কলেজে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের ছাত্র।
পার্বতীপুর হাবড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেওয়া জন্মসনদ অনুযায়ী তার
জন্ম তারিখ ২৮.০৯.১৯৯৮ ইং।
এ সময় তার কোনো ছবি আছে কি না জানতে চাইলে প্রথমে তার
বাবা-মা ছবি দিতে পারেননি। পরে তার বাবা একটি ব্যানার বের করে
নিয়ে আসেন। যেটি বাংলা ১৪৩০ সনের দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা
জানিয়ে তৈরি করা ব্যানার। যাতে লেখা রয়েছে, প্রতিষ্ঠাতা
সভাপতি/চেয়ারম্যান, আর্ন্তজাতিক সাম্প্রদায়িক সম্মেলন। এই
ব্যানারে তার ছবিও পাওয়া যায়। কথা বলতে বলতেই তার বাবা নরেশ চন্দ্র রায়
ব্যানারটি ছিঁড়ে ফেলেন।
বাবা নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে উজ্জল রায়
সবার ছোট। সে কীভাবে, কেন বা কার পাল্লায় পড়ে এই কাজ করেছে তা
তিনি জানেন না।
তিনি বলেন, আমার ছেলে মানসিক রোগী। আমি ছেলের হয়ে সবার
কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এ ব্যাপারে জানতে একাধিক প্রতিবেশীর কাছে
গেলেও কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম জানাতে
অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, উজ্জল রায় নয়, আমরা তাকে ভিভিড সাহা
নামে চিনি।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম
বলেন, আমরা কিছুই জানি না। আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
বিষয়টি জানতে উজ্জল রায় ওরফে ভিভিড সাহার মোবাইল নম্বরে কল করা
হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।