Monday, April 21, 2025
Homeলালমনিরহাটলালমনিরহাটে ‘ঢেকে রাখা’ মুক্তিযুদ্ধের সেই ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়েছে

লালমনিরহাটে ‘ঢেকে রাখা’ মুক্তিযুদ্ধের সেই ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়েছে

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

রংপুর নিউজ ডেস্কঃ
লালমনিরহাট শহরের বিডিআর রোডে শিশু পার্কের পাশে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চে স্থাপিত ম্যুরালটি আগে থেকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এবার জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তার একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে।

রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শ্রমিকরা ম্যুরাল ভাঙার কাজ করেছেন।

ম্যুরাল ভাঙার কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক জানান, ডিসির নির্দেশে তারা কাজ করছেন।
ম্যুরালটি কেন ভাঙা হয়েছে তা জানার জন্য লালমনিরহাটের ডিসি এইচ এম রকিব হায়দারকে মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি ধরেননি।

লালমনিরহাটের এডিসি (রাজস্ব) জি আর সারোয়াকে ফোন করলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”
স্বাধীনতা দিবসে মুর‌্যালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এর আগে ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও ম্যুরালটি একইভাবে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। তখন মুক্তিযোদ্ধারা এর প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছিলেন।
পরদিন ২৭ মার্চ এ বিষয়ে ডিসি বলেন, “২০২৪ সালের ‘জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’- এ কারণে ম্যুরালটি ঢেকে দেওয়া হয়েছে।”

গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

লালমনিরহাটে যে ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে তাতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার, ৭১-এর গণহত্যা, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ জাতির গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা চিত্রিত ছিল।
ম্যুরাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ কিছু ছবি অপসারণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়, যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল।

এখন মুর‌্যালটি ভেঙে ফেলায় সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সংগঠনটির লালমনিরহাট এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মো. মোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আগেও ঢেকে রাখার প্রতিবাদ করেছি। এখন ম্যুরাল ভাঙার খবর শুনলাম, বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাব।”

লালমনিরহাট জেলা সম্মিলিত সাস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুফী মোহাম্মদ বলেন, “‘মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ’ নামে এ মঞ্চে প্রায় ১৪০ ফুট দীর্ঘ ম্যুরালটির বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট অংশ হতে তিনটি ছবি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন এই তিনটি ছবির জায়গায় কোন কোন ছবি বসবে তা সময়ের ব্যাপার, যা ইতিহাস হয়ে থাকবে।

“৫২ থেকে শুরু করে ৭১-কে তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এই ম্যুরালে শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণকে অস্বীকার করার তো কোনো উপায় নেই।”

এর আগে ২৯ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় সংগঠক রাসেল আহমেদ বলেন, “আমরা বায়ান্ন, একাত্তর ও চব্বিশকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না।”

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর