নীলফামারী প্রতিনিধি: অর্থনীতির এই যুগে কৃষিই হোক দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় কাজ করে যাচ্ছে নীলফামারীর ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার। খামারটিতে ভিত্তি বীজআলু উৎপাদনের পাশাপাশি বোরো,,আমন, আউশ ধান চাষাবাদ করা হচ্ছে। অন্যান্য ধান চাষের চেয়ে আউশ ধান চাষাবাদ করা একটি চ্যালেঞ্জিং ফসল। এই ধানে পোকা,রোগ ও পাখির আক্রমণ বেশী হয়। অনেক ঝুকি থাকার কারনে কৃষক পর্যায়ে ডোমারে এর চাষাবাদ নাই বলেও চলে। তবে ডোমার ভিত্তি বীজআলু উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক আবু তালেব মিঞা বিগত কয়েক বছর থেকে সফলতার সাথে খামারটিতে আউশ ধান চাষ করে আসছে। ইতিমধ্যে আউশ চাষে আশেপাশের এলাকাসহ গোটাজেলায় সারা ফেলেছেন খামারটি। চলতি অর্থ বছরে ৩০০একর জমিতে আউশ(ব্রিধান৯৮) চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯০ মে.টন। বর্তমানে খামারটিতে আউশ ধান কর্তন ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে।
সরজমিনেখামারে গিয়ে দেখাযায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের আধুনিক কৃষি যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার) দিয়ে আউশ ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। উৎপাদিত ধান গুলো বীজ হিসেবে দানা শস্য গ্রেডিং মেশিন দ্বারা যথাযত ভাবে গ্রেডিং করে সংরক্ষণ করছে খামার কর্তৃপক্ষ।
বিএডিসি অফিস সূত্রে জানাযায়, খামারটিতে এর আগে শুধু ভিত্তি বীজ আলু চাষাবাদ করা হতো। আলু উঠানোর পর কয়েক মাস জমি গুলো পতিত হয়ে পড়ে থাকতো। আর কোন ফসল চাষাবাদ করা হতো না। খামারটির উপ-পরিচালক আবু তালেব মিঞা আসার পর থেকে আউশ ধানের চাষাবাদ শুরু করা হয়। ২০২১ সালে উপ-পরিচালক আবু তালেব মিঞা ১০০ একর জমিতে পরিক্ষামুলক আউশ ধান চাষাবাদ করেন। বেলে মাটির পরিমাণ বেশী থাকায় সে বছর তেমন ভালো ফলন হয়নি। কিন্তু ২০২২ সালে বেলে মাটির সাথে এটেল মাটির সংমিশ্রন ও জৈব সার প্রয়োগ করে ২৪০ একর মাটিতে আউশ ধান চাষাবাদ করা হয়। সেই বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৩০৮ টন ধান বীজ। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয় ৩৮০টন। সে বছরেই আউশের বাম্পার ফলন হয়। এখন খামারটিতে প্রতি বছরেই আউশের ধানের চাষাবাদ বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে খামারটিতে ২৫৫ একর জমিতে আউশ ধান চাষ করা হয়েছিলো। এবার চলতি অর্থ বছরে ৩০০একর জমিতে আউশ (ব্রিধান ৯৮) চাষ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯০ মে.টন। উৎপাদিত সকল ধান মানসম্পন্ন ভিত্তি ধানবীজ হিসেবে বাজারজাত করা হবে।
ডোমার ভিত্তি বীজআলু উৎপাদন খামারে উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু তালেব মিঞা জানান, বর্তমানে ধানবীজ উৎপাদন কার্যক্রমে শতভাগ আধুনিক যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। খামারটিতে রাইস সিডিং মেশিন দ্বারা সিডিং ট্রে ব্যবহার করে আউশ ও আমন ধানবীজ রোপন করা হয়েছে। ৩০০ একর জমিতে আউশ ধানবীজ রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দ্বারা রোপন করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ মে.টন। বর্তমানে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে আউশ ধান কর্তন চলছে। আশা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এই উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলে আগামী মৌসুমে দেশে ৩৯হাজার একর জমি আউশ ধান চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
-মামুন/নীলফামারী