এ কে এম কায়সারুল আলম, রংপুর প্রতিনিধিঃ
প্রেমিকাকে বিয়ে করতে প্রয়োজন ছিল অর্থের । সেই অর্থ সংগ্রহের জন্য অপহরণ করা হয়েছিল এক মাদ্রাসা ছাত্রকে। মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে হত্যা করেছে অপহরণকারীরা।
বুধবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সোহান ইসলাম (২১), তার বাবা শহিদুল ইসলাম (৪৫) ও মা শাহানা বেগমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের ফকিরটারী রতিপুর এলাকায় একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিযুক্ত সোহান নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার মতি মাস্টারের মেয়ে রত্নার সঙ্গে গত তিন বছর ধরে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ঈদের পর রত্নাকে বিয়ে করার পরিকল্পনা ছিল তার। তবে বিয়ের জন্য এবং বাবার ঋণ পরিশোধ করতে টাকার প্রয়োজন হয়। সেই টাকা জোগাড় করতেই সোহান মাদ্রাসা ছাত্র শাকিলকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয় ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, সোহান শিশু শাকিলকে মাটি সরানোর কাজের কথা বলে ৩০ টাকা দিয়ে কৌশলে নিজ বাসায় ডেকে নেয়। এরপর বাবার শয়নকক্ষে লুকিয়ে রেখে শাকিলের মা জয়নব বেগমের কাছে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে । তবে শাকিলের মা টাকা না দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে সোহান প্রথমে শাকিলের হাত-পা বেঁধে ফেলে, এরপর বুকের ওপর বসে গলা চেপে ধরে। এসময় তার বাবা শহিদুল শাকিলের পা চেপে ধরে। শিশুটি নিস্তেজ হয়ে গেলে মরদেহ বাড়ির সংলগ্ন টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের প্রায় ৫-৬ ফুট গভীরে মাটিচাপা দেওয়া হয় ।
এদিকে, মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ সোহান, তার বাবা ও মাকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে তারা হত্যার দায় স্বীকার করলে,তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেপটিক ট্যাংক থেকে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরনবী জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার বিকেলে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।