ইকবাল বাহার, পঞ্চগড়:
আমাদের জন্ম পঞ্চগড়ে। আমরা পঞ্চগড়েই ভালো চিকিৎসা সেবা পেতে চাই। এই পঞ্চগড়েই আমরা মরতে চাই। আমরা উন্নত চিকিৎসা নিতে রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা কিংবা বিদেশে গিয়ে মরতে চাইনা। কাজেই চীনের অর্থায়নে একহাজার শয্যার প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালটি পঞ্চগড়ে স্থাপন করতেই হবে।
বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে ঘন্টাব্যাপী এক গণজমায়েত ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা।
এর আগে, জেলা আদালতের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে এখানে এসে শেষ হয়। পঞ্চগড় জেলাবাসীর ব্যানারে কর্মসূচীটি পালন করা হয়।
পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জুলফিকার রহমানের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ গণ জমায়েতে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন, সেক্রেটারি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, আইনজীবী ব্যারিষ্টার মাহমুদ আল মামুন, জেলা জাগপার সহসভাপতি সামমুজ্জামান নয়ন মাস্টার, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তারিকুজ্জামান তারেক, সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসান হাবিব, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ পঞ্চগড় শাখার সভাপতি আব্দুল হাই, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মীর মোর্শেদ তুহিন, গণধিকার পরিষদ পঞ্চগড় জেলার সভাপতি মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা দিনাজপুর, রংপুর ও নীলফামারীতে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। এই জেলাগুলোর দূরত্ব খুবই কম এবং কাছাকাছি। কিন্তু পঞ্চগড় থেকে এই জেলাগুলোর দূরত্ব অনেক বেশি। পঞ্চগড় হাসপাতালে একজন রোগী গুরুতর আহত হয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর দিনাজপুরে স্থানান্তরিত করা হয়। মাঝপথে অনেক সময় মৃত্যু ঘটে। আমরা আর কারো এমন মৃত্যু চাই না। আমাদের নাগরিক দাবি মানসম্মত চিকিৎসাসেবা চাই।
তারা বলেন, রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় আছে, মেডিকেল কলেজ আছে; দিনাজপুরেও মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। মেডিকেল কলেজ নীলফামারীতেও আছে। এখানে ইপিজেড, বিমানবন্দর, রেল কারখানাও রয়েছে। কিন্তু পঞ্চগড় স্বাধীনতার পর থেকে বঞ্চিতই রয়ে গেছে। আমরা এই বৈষম্য আর মানতে চাইনা।
তারা আরও বলেন, পঞ্চগড়ে একটি চারদেশীয় স্থলবন্দর রয়েছে। এখানে চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত ১০০০ শয্যার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালটি হলে ভূটান, নেপাল ও চীনের ছাত্রছাত্রীরাও পড়াশোনা করতে আসবে, চিকিৎসা সেবা নিতে আসবে। আমরাও বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা পাবো।
তারা উল্লেখ করেন, গত ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল চীনের সহযোগিতায় পঞ্চগড়ো ১০০০ শয্যার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী ও চীনের রাষ্ট্রদূত মি. ইয়াও ওয়েন। কিন্তু পাশের দেশের আপত্তিতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পঞ্চগড়ে শুধু ১২ একর জমি নয় শত একর নির্ভেজাল জমি আছে। হাসপাতালটি পঞ্চগড়ে হতেই হবে। যদি হাসপাতালটি পঞ্চগড়ে করা না হয় তাহলে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সেই সাথে আগামী ১৮ এপ্রিল শুক্রবার জুমআর নামাজের পরে একটি মিছিল বের করে চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় গণজমায়েত হবে।