Wednesday, March 19, 2025
Homeকুড়িগ্রামকুড়িগ্রামে ঘুষ নেওয়ায় ছাত্র-জনতার তোপের মুখে ভূমি উপ-সহকারীর পদত্যাগ

কুড়িগ্রামে ঘুষ নেওয়ায় ছাত্র-জনতার তোপের মুখে ভূমি উপ-সহকারীর পদত্যাগ

- Advertisement -

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

ঘুষ নেওয়ার অপরাধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার নাম হুসাইন মোহাম্মদ রাসেল। তিনি দীর্ঘদিন থেকে তার অফিসে আসা সেবাগ্রহীতাদের নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘুষ ছাড়া তার অফিসে কোনো কাজ হত না বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগে বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে ছাত্র-জনতা ঘুষের টাকা ফেরত ও তার শাস্তির দাবিতে অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে।

জানা য়ায়, গত মঙ্গলবার সকালে মাসুদ নামের একজন সেবাপ্রত্যাশীর কাছে এক হাজার টাকার খাজনার বিপরীতে ১৩ হাজার টাকা গ্রহণ করে তার অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর। পরে তারা বুধবার সকালে ছাত্ররা এ সংবাদ পেলে কেদার ভূমি অফিসে আসেন। মাসুদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররা অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর ও ভূমি কর্মকর্তা হুসাইন মোহাম্মদ রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ঘুষের ১৩ হাজার টাকা ছাত্রদের উপস্থিতিতে ফেরত দেয় অফিস সহায়ক।

এরপর শত শত জনতা অফিসটি ঘিরে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় ছাত্রদের কাছে অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ নিয়ে আসেন। দুপুর থেকে বিক্ষোভের মাত্রা তীব্র হলে ছাত্র জনতার চাপের মুখে নিজের দোষ শিকার করে নিজ পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি ইস্তফা পত্র লিখে স্বাক্ষর করে ছাত্রদের কাছে জমা দেন। এ সময় অফিসের ছাদে উঠে উপস্থিত বিক্ষোভকারী জনতার উদ্দেশে নিজ কর্মের জন্য মাফ চান তিনি। পরে জনতার চাপে তার গলায় জুতার মালা পরানো হয়।

ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, গতকাল মাসুদ নামের একজনের জমির খাজনা দিতে এলে তার নিকট ১৩ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০ টাকা সরকারি ফি বাবদ আর বাকি টাকা উপরি হিসেবে নেওয়া হয়। গতকাল স্যার (ভূমি উপসহকারী) উপস্থিত ছিলেন না। তার সাথে ফোনে কথা বলে এই টাকা রেখে দিয়েছিলাম। এখান থেকে স্যার সাড়ে সাত হাজার টাকা নিতেন বাকি টাকা আমি নিতাম। আজ (বুধবার) ছাত্রদের কাছে বিষয়টা গেলে সেবাগ্রহীতাকে সব টাকা ফেরত দিয়েছি।

ভূমি উপসকারী হুসাইন মোহাম্মদ সকল অনিয়ম ও ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তিনি নিজ অপরাধের জন্য ছাত্রদের নিকট ইস্তফা পত্র দিয়েছেন।

এদিকে বিকাল ৫ টার দিকে খবর পেয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিব্বির আহম্মেদ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে ছাত্র জনতার কথা শোনেন তিনি। এ সময় ভূমি উপ-সহকারীর ইস্তফাপত্র ছাত্ররা তার কাছে হস্তান্তর করেন। পরে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। পরে উপ-সহকারীকে নিজ জিম্মায় নেন তিনি।

নাগেশ্বররী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বলেন, ভূমি উপ-সহকারী রাসেলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। আর তার দেওয়া ইস্তফাপত্র জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আর সেবাপ্রত্যাশীদের ঘুষের টাকার লেনদেনের যথাযথ প্রমাণ দিলে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box
spot_img
এ বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক পঠিত খবর