আব্দুল হাই,নাগেশ্বরী (প্রতিনিধি) কুড়িগ্রাম
উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক তামাক চাষে ঝুকছেন কৃষক। স্থানীয়
কৃষি বিভাগের উদাসীনতার কারনে ফসলী জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে বলে জানা গেছে। উৎপাদন
করতে কোম্পানি গুলো তামাকের অধিক মুল্যে বিক্রয়ের নিশ্চয়তাদান, চাষের জন্য সুদমুক্ত
ঋণ,প্রতিনিধিদের নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন, পরামর্শ দানসহ নানা কারনে ফসল ছেড়ে তামাক
চাষে ঝুঁকছেন কৃষক।
পরিবেশ ও মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির বিষয়টি জেনেও কৃষক বেশী মুনাফার কারনে তামাক
চাষে ঝুঁকছেন হাসনাবাদের কয়েকজন কৃষক। এদিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান কোম্পানীর
সুদ মুক্ত ঋনের কারনে কৃষক তামাক চাষে উৎসাহিত করছে। তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে
কৃষকদের নিয়ে সরকারী ভাবে কোন সভা সেমিনারের উদ্যোগ গ্রহন করেনি উপজেলা কৃষি
সম্প্রারণ বিভাগ।
হাসনাবাদ ইউনিয়ন যুব উন্নয়ন’ সংগঠনের সভাপতি ডাঃ মোঃ সাইদুর রহমান বলেন তামাক
চাষে পরিবেশ ও মানবদেহের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ফসলি
জমিতে তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য ফসল ফলনের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে।
একটি জরিপ বলছে দেশে প্রতি বছর তামাক জাতদ্রব্য সেবনের কারণে বিভিন্ন প্রাণঘাতি
রোগে প্রায় ১২ লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তামাক সেবনে লিভার ও ফুসফুস বেশি আক্রান্ত
হয়ে মানুষ মৃত্যু বরণ করছে। তামাকের বহুল ব্যবহার হৃদ্ধসঢ়;রোগ, ক্যানসার, বক্ষব্যাধি ও মৃত্যুর
অন্যতম প্রধান কারন হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
হাসনাবাদে ইউনিয়নে ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে কয়েকটি গ্রামে তামাক চাষ লক্ষ্য করা গেছে ।
ক্ষত্রিপাড়া, সেনপাড়া, মাঝি পাড়া ও দক্ষিন ব্যাপারীহাট এই সব এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখে
প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। আনন্দবাজার গ্রামের মোঃ মেহের আলী জানান গত বছর
২০ শতক জমিতে তামাক চাষ করছি এবার ৬০ শতক জমিতে তামাক লাগিয়েছি এবার দাম বেশি।
আবুল খায়ের কোম্পানির প্রতিনিধি তামাক কিনার জন্য যোগাযোগ করছে। এবার দাম বেশি
১০ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ তামাকের দাম বলছে কোম্পানিগুলো।
ক্ষত্রিপাড়ার সুজন জানান এবার প্রথম দুই বিঘাতে তামাক চাষ করছি লাভ লসের হিসাব
বুঝতেছি না। অন্যরা চাষ করছে তাদের দেখাদেখি করছি।
ক্ষতিকর জেনেও এবার ২ একরে জমিতে তামাক চাষ করেছেন দক্ষিন ব্যাপারী হাট গ্রামে
আশরাফুল। মাঠে দু‘জন শ্রমিক নিয়ে তামাক পাতা ভাঙছিলেন তিনি। এ সময় আশরাফুল বলেন
আলু চাষে বীজ কিনতে বিশ হাজার টাকার মত লাগে। এদিকে তামাকের বীজ কম্পোনি ফি দেয়,
তেমন খরচ নাই । তামাক চাষে লাভ বেশি ঝুকি কম। কোম্পানি গুলো তামাক কিনার জন্য
নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তার সাথে।
হাসনাবাদে তামাক চাষের বিষয় জানতে চাওয়া হলে নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ
শাহরিয়ার হোসেন বলেন, তামাক চাষে সরকারী কোন প্রণোদনা নেই। কৃষকদের তামাক চাষে
নিরুৎসাহিত ও সর্তক করা হচ্ছে। হাসনাবাদের কৃষকরা তামাক চাষ না করার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কৃষকদের তামাক চাষে উৎসাহিত না করার জন্য কোম্পানিগুলোকে
সর্তক করা হবে বলেও তিনি জানান।