দেবীগঞ্জে জমি দখলের বিরোধে যুবদল নেতার নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলা, আহত ৬
দেবীগঞ্জ উপজেলার চর তিস্তাপাড়া খয়ের বাগান এলাকায় জমি দখলের বিরোধকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা আব্দুল জব্বার এর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি কৃষক মোশারফ হোসেন এর বাড়িঘর ভাঙচুর এবং চাষাবাদ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার ফলে অন্তত ৬ জন পরিবারের সদস্য আহত হয়েছেন; তারা বর্তমানে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে, হামলাকারীরা দা-কুড়াল, শাবল ও লাঠিসোটা নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর, পরিবারের সদস্যদের মারধর এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এছাড়াও, প্রায় ৩০০টি কলা গাছ ও ২০০ এর বেশি চা গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ভুক্তভোগী দাবি করেছেন, এতে আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা।
মোশারফ হোসেন ওই অঞ্চলের পৈতৃক ও ক্রয়ের ভিত্তিতে দুই বিঘা জমির মালিকানা দাবি করছিলেন। গত এক মাসে দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আব্দুল জব্বার ও অন্যদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। অভিযোগ আছে, ৬ সেপ্টেম্বরেও জব্বার তার বাহিনী নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী আসমা আক্তার বলেন, “আমরা ৩০ বছর ধরে ওই জমিতে চাষ করছি। হঠাৎ আমাদের জমিতে তারা এলে আমরা ভয়ে থাকতে পারি না। আমাদের চা-কলাগাছ কেটে ফেলেছে, বাড়িতে হামলা করেছে — আমরা নিরাপদে ঘরে ফেরতে পারছি না।”
গ্রামের কিছু বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “জব্বারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে ধরা পড়ার ভয় আছে; আমরা তার অপকর্মের বিচার চাই।”
অভিযুক্ত আব্দুল জব্বার ও তার অনুগতরা দাবি করেছেন, “ওই জমির মূল মালিক আমরা; আমরা কারো জমি দখল করি নি; পুলিশ আমাদের মারধর করেছে।”
ঘটনার পর উপজেলা যুবদলের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জব্বারকে দলীয় পদ থেকে স্থগিত করা হয় এবং রোববার মামলার এক আসামিকে আদালত জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোয়েল রানা জানান, “দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ থেকে এই ঘটনা ঘটে, আমরাও বিষয়টি নজরে রেখে তদন্ত করছি। রাজনৈতিক নেতারা সমাধানের চেষ্টা করেছে, কিন্তু এখনও দুই পক্ষের কেউ তা মানেননি।”
ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় মামলা করেছেন এবং তদন্ত শেষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আহতরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন এবং তাদের মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


মন্তব্য লিখুন